‘জমি চাষ করতে না পারায় এ বছর আমি অন্তত এক হাজার মণ ধান থেকে বঞ্চিত হলাম। আমার ঘরে ২১ জন মানুষ, তাদের নিয়ে খাব





কী?’……vব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নে এক বৃদ্ধ কৃষক অন্তত ৬০ বিঘা জমি চাষ করতে গিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বাধার মুখোমুখি হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ওই কৃষকের নাম রজব আলী (৯০)। পাকশিমুল ইউনিয়নের সাবেক





চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ওরফে কাছম আলী চেয়ারম্যান এবং বর্তমান মেম্বার মোতালিব মিয়া তার জমি চাষে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই কৃষক। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে পাকশিমুল এলাকায় ফসলি মাঠে ভূঁইয়ার চরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে সবুজের সমাহার।মাঝে মাঝে বেশ কয়েকটি জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে।





পাকশিমুল এলাকার কৃষক রজব আলী (৯০) বলেন, ‘পাকশিমুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ওরফে কাছম আলী চেয়ারম্যান এবং বর্তমান মেম্বার মোতালিব মিয়ার বাধায় আমার ৬০ বিঘা জমি চাষাবাদ করতে পারিনি। তারা লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গত ৫ জানুয়ারি সকালে গ্রামের পূর্ব দিকে ফসলি মাঠে ভূঁইয়ার চরের আমার সেচ স্কিম জোরপূর্বক দখল করে নেন। আমাকে ও আমার





সন্তানদের জমি চাষাবাদ করতে মাঠে নামতে দিচ্ছেন না তারা। আমার বীজতলা দখল করে নিয়ে কাছম আলী চেয়ারম্যান জোরপূর্বক আমার একটি জমি চাষ করে ফেলেছেন।’ কৃষক রজব আলী আরও বলেন, ‘জমি চাষ করতে না পারায় এ বছর আমি অন্তত এক হাজার মণ ধান থেকে বঞ্চিত হলাম। আমার ঘরে ২১ জন মানুষ আছে। পুরো বছর তাদের নিয়ে খাব কী? আমি প্রশাসনের কাছে





সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছি।’ রজব আলীর দুই ছেলে সলতু মিয়া ও আংগুর মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘কাছম আলী চেয়ারম্যান ও মোতালিব মেম্বারের সঙ্গে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ নেই। আমাদের বংশের লোকদের সঙ্গে তাদের জায়গাজমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। এই দুজন গ্রামের প্রভাবশালী। সরকারি খাস জমিসহ এলাকার বিরোধপূর্ণ জমি গ্রাস করাই তাদের





মূল পেশা ও নেশা। তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আমাদের সেচ স্কিম জোরপূর্বক দখল করেছেন। আমাদের জমিগুলো চাষাবাদ করতে দেননি।’ ‘আমরা এ বিষয়ে গত ২৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আদালত মামলাটি পিবিআই পুলিশকে তদন্তের জন্য দিয়েছেন; কিন্তু অর্ডারের কপি এখনো সেখানে পৌঁছেনি। এর আগে এ ঘটনায় কাছম আলী





চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে একতরফা সালিশ-বৈঠক করেন অরুয়াইল এলাকার সালিশকারক আবু তালেব মিয়া, কুতুবউদ্দিন ভূঁইয়াসহ কয়েকজন। তারা অন্যায়ভাবে একটা রায় দেন; কিন্তু আমরা এ রায় মেনে নিইনি।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কাশেম চেয়ারম্যান বলেন, ‘কৃষক রজব আলীর অভিযোগ সঠিক নয়। তাদের জমি চাষাবাদে আমি কোনো বাধা দেইনি। সেচ স্কিমের মিটার





আমার নামে। ২২ বছর ধরে রজব আলী এ সেচ স্কিম চালিয়েছেন। এর আগে তিন বছর এ সেচ স্কিম আমি চালিয়েছি। কৃষকদের অনুরোধে সেচ স্কিম আমি ফিরিয়ে নিয়েছি। এখানে কোনো প্রকার চাঁদা চাওয়া হয়নি।’ মোতালিব মেম্বার বলেন, ‘আমার ব্যাপারে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। রজব আলীর সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই।’ সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন মুহাম্মদ নাজমুল আহমেদ বলেন, ‘বিষয়গুলো আমাদের জানা নেই।





কেউ আমাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেননি। আমরা বিষয়গুলোর খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’