নানা আলোচনা-স’মা’লোচ’নার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক (২০২২-২০২৪) নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে





সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের দর্শকপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জায়েদ খান। এবারের নির্বাচন চলচ্চিত্রের শিল্পী সমিতির যে কোন নির্বাচনকে হার’ মানিয়েছে। বেশ অনেক কারণেই এবারের নির্বাচন নিয়ে সারা দেশের দৃষ্টি ছিলো এফডিসির





দিকে। যার অন্যতম কারণ নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। ইলিয়াস কাঞ্চন (১৯১) পেয়ে মিশা সওদাগরকে (১৪৮) হারিয়ে ৩৩ বছর পর শিল্পী সমিতির দায়িত্ব নিয়েছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন এত বছর পর এসে দেশের জনপ্রিয় খল অভিনেতা মিশা সওদাগরকে কিভাবে হা’রিয়ে জয়ের হাসি মুখে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন? নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বাংলা





চলচ্চিত্রের এক ইতিহাস বলা চলে। তার ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ ছবিটি বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বাধিক ব্যবসা সফল সিনেমা। শুধু এই সিনেমা নয় তার অনেক সুপার হিট ছবি আছে যা দর্শকের মনে আজো জায়গা করে আছে। গ্রাম থেকে শহর কোথায় নেই তার ভক্ত! শুধু সিনেমা নয়।
সামজিক নানা ক’র্মকা’ণ্ডের সাথেও তিনি জড়িত। তার গড়া ‘নিরাপদ সড়ক





আ’ন্দো’লন’ যেন আলোর দি’শা’রি হয়ে কাজ করছে। সড়ক দূ’র্ঘট’না কমাতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। শিল্পী সমিতির নির্বাচন করছেন ইলিয়াস কাঞ্চন খবরটি শুনে তাকে নিয়ে সামজিক যোগাযোগ ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের অনেকেই এবারের নেতৃত্বে তাকে চেয়েছেন। সব মিলিয়ে নির্বাচনে তার





জয় হয়। এবার আসা যাক সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের দিকে। এই নির্বাচনের মূল কেন্দ্র বিন্দু ছিলো জায়েদ খান ও নিপুণ। সরজমিনে দেখা গিয়েছে অন্যান্য প্রার্থীদের তুলনায় এই প্রর্থীদের মাঝেই ল’ড়া’ইটা ছিলো চোখে পড়ার মত। জায়েদ খান ১৭৬ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে তার প্র’তিদ’ন্দী চিত্রনায়িকা





পেয়েছেন নিপুণ (১৬৩) ভোট। হা’র-জিতের খেলায় ভোটের ব্যবধান বেশী নয়। তবে ল’ড়াই করতে হয়েছে বেশ দুজনকেই। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন জায়েদ খান কিভাবে নির্বাচিত হন? তিনি নায়ক হিসেবেও তো নিপুণের থেকে বেশী জনপ্রিয় নয়! ইলিয়াস কাঞ্চন জনপ্রিয়তা পাশাপাশি নানা সামাজিক কর্মকা’ন্ড দিয়ে যেমন সবার সা’স্থা অর্জন





করেছেন দীর্ঘ দিনের ক্যারিয়ারে ঠিক তেমনে জায়েদ খান জনপ্রিয়তার দিক থেকে তেমন এগিয়ে না থাকলেও সাংঠনিক ভাবে বেশ সফল। যার প্রমাণ মিলে গত ‘করো’নার সময়ে তার নানা কর্মকা’ণ্ডের জন্য। করোনায় অস’হায় শিল্পীদের সমিতির পাশাপাশি নানা মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন অনেকবার। নিয়োমিত সকল শিল্পীদের





সাথে যোগাযোগ করেছেন। খোঁজ নিয়েছেন। জেনেছেন কখন কার কি প্রয়োজন। শুধু তাই নয় ক’রো’না’য় আ’ক্রা’ন্ত বাংলা চলচ্চিত্রের অনেক শিল্পীর লা’শ কাধে নিয়েছেন। যখন তাদের পাশে পরিবারের অনেকেই ছিলেন না। যখনই যার বি’প’দ শুনেছেন দৌ’ড়ে গেছেন তাদের কাছে। সেটা হউক মধ্যরাত কিংবা দিন। পাশাপাশি জায়েদ খানকে





বরাবরই সম’র্থন দিয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি শিল্পী ফারুক, সোহেল রানা, আনোয়ারা থেকে অনেকেই। এদিকে,নিপুণকে নিয়েও বেশ আশাবাদী ছিলেন অনেকেই। ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে একই প্যানেল থেকে নির্বাচন করলেও তিনি হে’রে গেছেন জায়েদ খানের কাছে। নিপুণের জনপ্রিয়তা একেবারে কম না। তবুও কেন হে’রে গেলেন তিনি? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরপা’ক খাচ্ছে! একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় জায়েদ খানের বিভিন্ন কাজের কাছে তিনি পি’ছি’য়ে আছেন।
যদিও তিনিও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শিল্পীদের পাশে দাড়িয়েছেন। পাশাপাশি সরজমিনে দেখা গিয়েছে শুরু থেকেই ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ প্যানেলের অনেকেই বেশ আ’ক্রম’না’ত্মক ছিলেন। প্রচারণার সময় বিভিন্ন কর্মকা’ণ্ডের সময় নানা বিষয় নিয়ে ‘সমালো’চনার সম্মু’খীন হতে হয়েছে নিপুণ সহ রিয়াজকে।
বিশেষ করে ‘নোট দিয়ে ভোট কেনার দিন শেষ’ গানটি নিয়ে। গানটির সাথে কোমর দু’লিয়ে নিপুণ সহ অনেকের নাচ সিনিয়র শিল্পীদের মনে ক’ষ্টে’র জ’ন্ম দিয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন গানটির মাধ্যমে সিনিয়র শিল্পীদের অ’পমা’ন করা হয়েছে। যার প্রভাব হয়তো নির্বাচনে পরেছে। সব কিছু মিলিয়ে বেশ উত্তে’জ’নার মধ্য দিয়েই শেষ হলো এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচন।
ইলিয়াস কাঞ্চন ও জায়েদ খান ছাড়াও আরও নির্বাচিত হয়েছেন সহ-সভাপতি পদে আবারও নির্বাচিত হয়েছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল (২১৯) ও রুবেল (১৯১)। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন সাইমন সাদিক (২১২), সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনূর (১৮৪), আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী (২০৫), দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক আরমান (২৩২), সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক ইমন (২০৩), কোষাধ্যক্ষ পদে আজাদ খান (১৯৩)।
দুই প্যানেলে কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন- অঞ্জনা সুলতানা (২২৫), অরুনা বিশ্বাস (১৯২), অমিত হাসান (২২৭), আলীরাজ (২০৩), কেয়া (২১২), চুন্নু (২২০), জেসমিন (২০৮), ফেরদৌস (২৪০), মৌসুমী (২২৫), রোজিনা (১৮৫), সুচরিতা (২০১)।