‘শুধুমাত্র দু-বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’ পোস্টার লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক তথা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া শিক্ষিত বেকার যুবক আলমগীর কবিরের





জন্ম জয়পুরহাটের পাঁচবিবির মোহাম্মদপুর ইউপির নিভৃতপল্লী বরাইল গ্রাম। তার বাবা পল্লীচিকিৎসক কফিল উদ্দিন ও মা আম্বিয়া খাতুন একজন গৃহিণী। কবির পড়ালেখা শেষ করে চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়। অভাবের সংসার ও বিধবা বড়বোনের দর্জির কাজে উর্পাজনের টাকায় আর





কতদিন চলে। সে বাড়িতে ফিরতেও পারে না। কোনো উপায় না পেয়ে অবশেষে খাওয়ার বিনিময়ে পড়িয়ে শহরে থেকে চাকরির খোঁজ করবে।
এ কারণেই পোস্টারটি লাগায় কবির। তার এমন অসায়ত্বের খবর ফেসবুকসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশের পর দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান তার পাশে এগিয়ে আসে। বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের





মাধ্যমে আলোচিত সমালোচিত আলমগীর কবিরের চাকরি হয় সুপারশপ স্বপ্নতে। পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরও ছেলের চাকরি না হওয়ায় আগে রাতে ঘুম হত না। ছেলের চাকরি হওয়াতে রাতে এখন শান্তির ঘুম হয় বলে জানান আলমগীরের বাবা। তার বাবা কফিল উদ্দিন বলেন, আমার বয়স হয়েছে, ডাক্তারি (পল্লী চিকিৎসা) পেশাও তেমন চলে না।





বিধবা মেয়ের দর্জির উর্পাজনে সংসার চলে। ছেলের সুখবরের কথা বলতে গিয়ে দু’চোখ দিয়ে আনন্দের অশ্রু ঝরতে দেখা যায়। ছেলে চাকরির বেতনের টাকা দিক বা না দিক বাকি জীবন সে সুখে থাক এটাই আমাদের আনন্দ। নাটকীয়ভাবে এমন একটি প্রতিষ্ঠিত জায়গায় চাকরি পাওয়ার পর অনুভূতি ও বাবা-মার জন্য কি করবেন জানতে চাইলে আলমগীর বলেন, যে বাবা-মা আমার





জন্য এত কষ্ট করেছে তাদের সুখের জন্য আমি সব করব। আলমগীরের আরেক মায়ের এক ছেলেসহ দুই ভাই এবং ৪ বোন। সৎভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী ও একবোন মারা গেছে। মেয়েদের বিয়ের খরচ যোগাতে এবং কবিরকে বগুড়ায় ম্যাচে রেখে পড়াশোনার খরচ চালাতে ৪ বিঘা জমির ৩ বিঘাই বিক্রয় করে তার বাবা। ১ বিঘা জমির ফসল, দর্জির কাজ,





হাঁস-মুরগী ও কয়েকটা ছাগল লালন পালনের আয়ে সংসার চলে বলেন, কবিরের বোন নুরজাহান আক্তার মিষ্টি। প্রতিবেশী মনোয়ারা বেগম বলেন, ছেলেটা খুব ভালো এবং শান্ত প্রকৃতির। বছরে দুই ঈদ ছাড়া বাড়িতে খুব কম আসে। এলেও ৩-৪ দিন পরেই আবার বগুড়ায় চলে যায়।
মোহাম্মদপুর ইউপির সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শিল্পী নাহার বলেন, কবিরেরা অভাবী তার বাবার ডাক্তারি





পেশা এখন চলে না বয়সের কারণে। টেলিভিশন ও পত্রিকার মাধ্যমে আলমগীরের চাকরি খবর জানতে পেয়ে খুশি হয়েছি। পাঁচবিবি থানার ওসি পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, পাঁচবিবির বরাইল গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক আলমগীর বগুড়াতে ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই পোস্টার লাগিয়ে ভাইরাল হলে থানা পুলিশ তার পরিবারের খোঁজ নেয়। তার বাবা-মা ও গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় প্রকৃতই তারা অভাবী।